সুখটান (sukhtan : a flash fiction)


   


সুখটান


সুদীপ ব্যানার্জী





কাশির দমক চেপে ষষ্ঠীচরণ একবার টোকেনের দিকে তাকালো। পাঁচনম্বর।তিন গ্যাছে।তার মানে আর একজন।বুকপকেটে আরেকবার হাত দিয়ে দেখা হয়ে গেল একশোটাকার নোট ঠিক জায়গায় আছে কি না।এই চুপচাপ পরিবেশে বেয়াড়া কাশি ষষ্টীচরণকে বেশ লজ্জায় ফেলে দিচ্ছে।ঘড়িতে ১১টা।

  ডাক পড়তেই চেম্বারে ঢুকে একটু হেসে "নমস্কার,ডাক্তারবাবু" বলাটা যে খুব সপ্রতিভ হল না, বেশ বুঝেছে ষষ্ঠী। ইশারায় বসতে বলে ডাক্তার এ্যাসিসটেন্টের দিকে তাকালেন।"ষষ্ঠীচরণ দাস।৫৪।",বলে উঠলো সে। মুখে থার্মোমিটার গুঁজে, প্রেসার মাপার যন্ত্রটা বেশ কয়েকবার ফস্ ফস্ করার পর "১২০/৮০" বলে খপ করে থার্মোমিটার টেনে, "৯৭"। তার কাজ শেষ।ডাক্তার এবার খুব মিহি গলায় বললেন," কী সমস্যা, বলুন?"।"কাশি"।"কদিন ধরে চলছে?"।"দিন চারেক।"কী করা হয়?"। "চাষ"।" ও"।"দিনের দিকে বেশী, না রাতের দিকে?"।"রাতের দিকে বাড়ে।"। "ওও...তা স্মোকিং করেন না কি?"।" "আঞ্জে???"।"বিড়ি - সিগারেট কিছু খান?"।"বিড়ি"।"বিড়ি?"।"তা দিনে কটা বিড়ি খান?"।"তা ওই ধরেন ঝুঁটিবিড়ি... একতাড়া।"।"একতাড়ায় কটা বিড়ি থাকে?"।"কটা হবে?ওই গোটা ১০,১২।"। "ও"। এরপর ডাক্তার প্রেস্ক্রিপশন লিখে এ্যাসিসটেন্টের হাতে ধরিয়ে দিলেন।ফিজ্ নিয়ে সে বললো," সাতদিন বাদে আবার দেখিয়ে যাবেন।"

    বাইরে বেরিয়ে সুরজের দোকান থেকে ১০টাকা দিয়ে একবান্ডিল ঝুঁ টিবিড়ি কিনে মোড়ের মাথায় মুক্তি মেডিকেলএ প্রেস্ক্রিপশন জমা দিয়ে দুবার সুখটান দিতে না দিতেই ডাক, "ষষ্ঠীদা"।কাউন্টারে যেতেই প্রেস্ক্রিপশন ফেরত।মুচকি হেসে উত্তর," ডাক্তারবাবু সাতদিন বিড়ি খেয়ে একতাড়ায় কটা বিড়ি থাকে জেনে যেতে বলেছেন।"

সদ্য কেনা বিড়ির প্যাকেট বের করে ষষ্ঠীচরণ দাস গুনতে শুরু করলেন,"এক,দুই,তিন..."।

google.com, pub-4286055196262572, DIRECT, f08c47fec0942fa0

দর্শন বানান ঠিক করুন তারপর বাজার নিয়ে ভাববেন (DORSHON BANAN THHIK KORUN TARPOR BAJAR NIYE VABBEN)



   দর্শন বানান ঠিক করুন তারপর বাজার নিয়ে ভাববেন
------------------------------------------------------------------------------


                        [এক ]


কাঠকুটো  রেখে দাও   শিরশিরে হিম নামতো  বন্ধুর  সাথে সেই সন্ধ্যায়
কুচো খড় ধিকিধিকি গরমে  রাস্তার চেনা  আঁকাবাঁকা  বয়ে 
ছুঁয়ে  রেখেছে দুজোড়া দস্তানা  পরম চাদরের  শীতস্নেহ 
পেলব আংরা  ধরে নাও সেই কাল কী যত্নে রেখেছিলে  বাঁধনের কেয়ারি



এখন সকালের হাতে  নির্ঘন্ট  মিলিয়ে নিতে  নিতে পাশ থেকে প্রজাপতি উড়ে আসে
রঙিন সেলুলয়েড স্ক্রীন থেকে একটা ছোঁয়াচ সাজানো বাগানে  ভিস্যুয়াল  ছড়াছড়ি


কোলাজ জুড়তো  যে ছেলে অপারের অলৌকিক ঢুঁড়ে ঢুঁড়ে 
পেট্রোল আর ডিজেল সন্ধানী  সে 
খনির উপাদান ঘেঁটে  সেই শিল্পী জীবাশ্ম হতে হতে 
চাপা পড়ে পাথরে  শুয়ে থাক ছাপছাপ কল্পনায়



কুয়াশা বুকে ছেলেবেলা বন্ধু নতুন  হয়েছে পাড়ার মোড়ে


          








                 [দুই]

 এই চঞ্চল ভেবে নেওয়া বিকেলে স্থির বলতে আছে কিছু ন্যাড়াগাছ

ঝরে গেছে ভাবো যদি শুধু  সবুজের  ছালছেঁড়া পাতা

 আয়নায় দেখি  শুকিয়ে এসেছে বিলাসী ত্বক

 লোমহীন ক্ষয়  ঘিনঘিন  সময়ে জ্যোতি ছাড়া বিম্ব

ডিসেম্বর  আনে যে  ঋতু  ভয়  পেতো তাকে আমার মৃত মা





              







          [ তিন ]

পিকনিকের দিন টিফিনবাক্সে গোটা সংসার ঢুকে যায়

সংসার মানে ওই আমরা কজন 

খুশি,মুক্তি, এলোমেলো  হাওয়া,গরম কফি

বিত্তবান সময় সেসব 

এখন গরীব অন্তর  মেলা হয় মিলনের

 আমিও কিনেছি হটপট

অনেকক্ষণ গরম থাকে সুখের বাক্সগুলো

   



                   

                                              সুদীপ ব্যানার্জী 
                     

                                                 ধণিয়াখালি                       

google.com, pub-4286055196262572, DIRECT, f08c47fec0942fa0

তিনটি লেখা...